খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চায় বাংলার জনগণ: সারজিস

Date:

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, চব্বিশের অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র হচ্ছে বিশ্বাস ধারণের। সবার আগে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চায় বাংলার জনগণ।

শুক্রবার ভোলায় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের জনমত তৈরিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণসংযোগে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। এ সময় শহরের বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণ করা হয়।

সারজিস বলেন, যেহেতু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে সামনে রেখে সারা দেশে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে এই বাংলাদেশ থেকে খুনি শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করেছে। ঘোষণাপত্রে সেই ব্যানারের নাম সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- খুনি হাসিনাসহ যাদের নির্দেশে এত মানুষকে খুন করা হয়েছে, রক্ত ঝরানো হয়েছে, তাদের বিচার এবং শাস্তির কথা স্পষ্ট করে এই ঘোষণাপত্রে থাকতে হবে। আমরা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা একাত্মতা পোষণ করেছেন। আমাদের ৭ দফা দাবিকে যৌক্তিক বলে জানিয়েছেন।

সারজিস বলেন, ‘আমরা আশা করি, গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহতদের সরকারি খরচে চিকিৎসা, আওয়ামী খুনি ও তাদের দোসরদের বিচার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পরিষ্কারভাবে উল্লেখসহ সাত দফা যৌক্তিক দাবি নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র রাষ্ট্র দ্রুত বাস্তবায়ন করবে।’

তিনি বলেন, এতদিন মানুষ দেখেছে কেবল ভোটের সময় রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের কাছে আসেন। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার আমলে ভোট চাইতেও কেউ আসেনি। আমরা এর পরিবর্তন চেয়েছি। আমরা যে বিশ্বাস ধারণ করি, ১৫ বছরের নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের চরম জুলুম ও নির্যাতনের অবসান করতে পেরেছি। বাংলার মাটি থেকে স্বৈরাচার হাসিনাকে লড়াই করে বিদায় করেছি। তাই ঘোষণাপত্রে কী থাকা প্রয়োজন- তা সাধারণ মানুষকে জানাতে আমরা সারা দেশের মতো দ্বীপ জেলা ভোলায় এসেছি।

এ সময় তিনি দ্বীপ জেলা ভোলার গ্যাসের মজুত প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, যে জেলায় গ্যাসের মজুত রয়েছে তারা কেন বাসা বাড়িতে গ্যাসের ব্যবহার করতে পারবেন না। যে জেলার অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা, বরিশাল নিতে পথে মারা যান, সেই জেলায় কেন মেডিকেল কলেজ হবে না। এমন বৈষম্য দূর করতেই আমরা আন্দোলন করেছি।

জুলাই বিপ্লবে ভোলার ৪৭ জন প্রাণ দিয়েছেন বলেও এ সময় উল্লেখ করেন সারজিস।

তিনি বলেন, এই ঘোষণাপত্রে প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার শ্রমিক মেহনতী মানুষের আত্মত্যাগের কথা উঠে আসতে হবে। এটি যেন কয়েকজনের কথা না হয়।

সারজিস আরও বলেন, খুনি হাসিনা গোপালগঞ্জে সিন্ডিকেট বসিয়েছে। তার পরিবার প্রত্যেকটি জায়গায় সিন্ডিকেট বসিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। সেগুলোকে শেষ করে সমতার একটি বাংলাদেশ দেখতে চায় বাংলার মানুষ।

সাত দফা যৌক্তিক দাবি নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র দ্রুত রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করেন সারজিস।

এর আগে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে ভোলা বাংলা স্কুল মোড়, সদর রোড, নতুন বাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন। পরে সরকারি স্কুল সংলগ্ন ইলিশা ফোয়ারা মোড়ে পথসভায় বক্তব্য দেন সারজিস।

এর আগে তিনি ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ জসিম উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সহানুভূতি জানান। এছাড়াও জসিম উদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন তিনি।

কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সমন্বয়ক এমএ সাঈদ, সহসমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুর রহমান তুহিন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন ফয়সাল, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারসহ ভোলার সমন্বয়ক ও ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন।

Popular

More like this
Related

যশোরে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৪, দুই ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

যশোরে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৪, দুই ছাত্রদল...

যশোরে শিশুকন্যার গলায় ছুরি ধরে মাকে ধর্ষণের চেষ্টা, আহত নারী হাসপাতালে ভর্তি

যশোরে শিশুকন্যার গলায় ছুরি ধরে মাকে ধর্ষণের চেষ্টা, আহত...

কর্মবিরতিতেও চলছে মেট্রোরেল, টিকিট ছাড়াই ভ্রমণ

কর্মবিরতিতেও চলছে মেট্রোরেল, টিকিট ছাড়াই ভ্রমণ চার কর্মীকে লাঞ্ছিত করার...

ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৫৩

ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৫৩‘কাতারগেট’ কেলেঙ্কারি তদন্তের...