দেশে কোরআনের আইন কায়েম না হলে জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না: আধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যশোর সহকারী সেক্রেটারি আধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস বলেন, দেশে কোরআনের আইন কায়েম না হলে জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না । আমরা আগামী দিনে দেশের এমন একটি পরিবর্তন চাই যেটি আল্লাহ তায়ালা তার কুদরতি শক্তি দিয়ে করেন। আগামী দিনের নির্বাচন যেন কলুষিত না হয়, টাকার কাছে নির্বাচন যেন জিম্মি না হয়। কালো টাকার কাছে নির্বাচন যেন এদিক-ওদিক চলে না যায়। মানুষের যাকে পছন্দ তাকে যেন ভোটটি দিতে পারে। আগামী দিনে এমন একটি নির্বাচন করে আমরা জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন করবো, ইনশাআল্লাহ। ফ্যাসিবাদী শক্তি যদি আবার এসে যায় তাহলে কিন্তু এ জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। তাই আগামী দিনে কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি যেন আমাদের মাথার ওপরে আসতে না পারে। পরাজিত শক্তি যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে তারা আর কোনো দিন যেন বাংলাদেশের মাটিতে এসে ভিত্তিস্থাপন করতে না পারে, সেই জায়গাটি আমরা আর কোনো দিন দেখতে চাই না।
তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করেই নির্বাচন দিতে হবে। সংস্কার না করে নির্বাচনে গেলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা খুবই কাঠন । এজন্য নির্বাচন হোক এটি আমরা চাই। তবে নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার আমাদের করতেই হবে। জাতির স্বার্থে যে সংস্কারগুলো খুব জরুরি সেগুলো আগে করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের পতনে কিছু সাংবাদিকরা তাদের কলম ধরেছিল অনেকেই জীবন দিয়েছেন। অনেকে কারাবরণ করেছেন। তাদের অবদানকে অস্বীকার করার উপায় নেই। আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে আমাদের কর্মকাÐ তুলে ধরেন এবং আমাদের গঠনমূলক সমালোচনা করেন। আমরা সাংবাদিকদের পাশে থাকতে চাই। যদি সকলের দোয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় যায়, তবে সাংবাদিকরা শান্তিপ্রিয় ভাবে কাজ করতে পারবেন । বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ক্ষমতায় আসলে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পথ সুগম হবে, কোন সাংবাদিকের ওপর কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ থাকবে না।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেলে শহরের প্রাচ্যসংঘর ওবায়দুলবারি অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যশোর সাংগঠনিক জেলার পেশাজীবী থানার উদ্যোগে সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক জেলার পেশাজীবি থানার সভাপতি খন্দকার রশিদুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আবু ফয়সাল এর সঞ্চলনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রমজানের ফযিলত নিয়ে আরো বলেন, এই মহিমান্বিত মাস দোয়া কবুল ও নাজাতের মাস। তাই এই রমজানুল মোবারক মাসে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশি বেশি চাইতে হবে। মানুষ যাতে তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি লাভ করতে পারে এজন্যই সিয়ামকে আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় করে দেয়া হয়েছে। কালামে হাকিমে বলা হয়েছে ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যে-রূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো-এই আয়াত উল্লেখ করে বলেন , প্রত্যেক মুমিনের উচিত মাহে রমযানের হক যথাযথভাবে আদায় করে আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করা। তিনি মাহে রহমানের প্রকৃত শিক্ষাকে বাস্তবজীবনে কাজে লাগিয়ে শান্তির সমাজ বিনির্মাণে সকলকে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা সহকারী সেক্রেটারী আধ্যাপক শাহবুদ্দীন বিশ্বাস, পেশাজীবী থানার অফিস সেক্রেটারি গাউসুল আজম, সমাজ কল্লাণ সেক্রেটারি রেজওয়ান হোসেন । এছাড়া সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান,কবি সাহিত্যিক গবেষক ও সাংবাদিক বেনজীন খান প্রমুখ ।
ইফতার মাহফিলে বক্তারা রমজানের তাৎপর্য ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে সমাজ উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা যাকাতভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান, যা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
ইফতার মাহফিলে মুসলিম উম্মার শান্তি এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে মুনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে যশোরে কর্মরত প্রিট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।