যশোরে সেই পিচের রাস্তায় আবারও ইটের সোলিং

Date:

যশোরে সেই পিচের রাস্তায় আবারও ইটের সোলিং  গত ৬ বছর পর যশোরের সেই পিচের রাস্তায় আবারও দেওয়া হচ্ছে ইটের সোলিং। মোটা বাজেটের উন্নয়ন কাজ শেষ হবার পরপরই তা ভেঙেচুরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় ইট দিয়ে সেখানে দেওয়া হচ্ছে জোড়াতালি আর পট্টি।এতে কাজের কাজ কিছু হবে না,শুধু টাকার শ্রাদ্ধ হবে বলে অনেকেই সমালোচনা আর মশকরা করছেন পথচারীরা। নজিরবিহিন লুটপাট করে অতি নিম্নমানের রাস্তা করায় আগের সরকারকে গালি দিয়ে মনের ঝাল মেটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
যশোর জেলার মধ্যে মহাসড়ক রয়েছে ৬টি। এগুলো হচ্ছে যশোর-খুলনা ভায়া নওয়াপাড়া মহাসড়ক, যশোর-খুলনা ভায়া চুকনগর মহাসড়ক, যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক, যশোর-মাগুরা মহাসড়ক,যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক এবং যশোর-নড়াইল মহাসড়ক।
এর মধ্যে যশোর-খুলনা ভায়া নওয়াপাড়া সড়কের যশোর অংশের রাজঘাট পর্যন্ত দূরত্ব ৩৯কিলোমিটার। এ মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে ২০২২ সালের প্রথম দিকে শেষ হয়।
সওজ সূত্র জানায়,২০১৮ সালে যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৯ কিলোমিটার উন্নয়নে ৩শথ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব অ্যান্ড ব্রাদার্স, তমা কনস্ট্রাশন অ্যান্ড কোং এ কাজ সম্পন্ন করে। সড়কটি ২৪ ফুট থেকে বাড়িয়ে ৩৪ ফুট চওড়া ও দুই লেন করা হয়। কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই শুরু হয় ভাঙন। কোথাও ফুলে ফেপে ওঠে। ভেঙে কোথাও উচু কোথাও হয় নিচু। রাস্তা জুড়ে অনেক স্থানে ঢেউ খেলানো উঁচু ঢিবি; গর্তে আর গর্তে ক্ষতবিক্ষত। বিটুমিন কার্পেটিং উঠে ইট খোয়া বেরিয়ে পড়েছে কোথাও কোথাও। খোয়া বেরিয়ে সারা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছে।
যশোরে সেই পিচের রাস্তায় আবারও ইটের সোলিং  ভেঙেচুরে এ মহাসড়ক এখন মৃত্যু ফঁাদে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকিতে পড়েছে যান ও জনচলাচল। গাড়ি একটু জোরে চালালে নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এখান দিয়ে গাড়ি চালানোর সময় যন্ত্রাংশের ক্ষতি হচ্ছে। মালবাহী ভারি যানবাহনের যন্ত্রাংশ ভেঙে যাচ্ছে। বড় যানবাহন চলে খুব সাবধানে, ধীরে আর হেলেদুলে। ছোটগুলো উল্টে পড়ার উপক্রম হয়। খুলনা-কুষ্টিয়া দূরপাল্লার রুটের কোন কোন যান বাধ্য হয়ে ভায়া নওয়াপাড়া এড়িয়ে ভায়া চুকনগর রুট ব্যবহার করছে। অভিযোগ রয়েছে, নির্মাণ কাজে সস্তা ও মানহীন সামগ্রী ব্যবহার করে বেশুমার লুটপাট চালানোয় দ্রুতই এ সড়ক বিনষ্ট হয়ে গেছে।
সড়ক দুটির কাজের শুরুতেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা।
 এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের এ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোন নিয়মনীতি মানেনি। তারা গেঁাজামিল দিয়ে ইচ্ছামত কাজ করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো ব্রিটিশ আমলের নোনা ধরা ইট ও খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙে গর্তে ব্যবহার করেছেন, যা দরপত্রে বলা হয়নি। এছাড়া, সড়কটি ৫ ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সেই নিয়মও মানেনি। সড়কে নতুন ইট বালি,খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে উঠানো মালামালই ফের ভরাট করা হয়েছে।যেকারণে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই শুরু হয় ভাঙন।এদুরবস্থার মধ্যে সড়ক বিভাগ পিচের রাস্তায় ইট বিছিয়ে জোড়াতালি আর পট্টি দেওয়ার কাজে নেমে পড়েছে।
 রুবেল নামে এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, আগের বাজেট লুটপাট হওয়ায় রাস্তা টেকেনি। এ রাস্তায় চলাচলে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি সেসময়ের সরকার, তাদের লুটপাটকারী নেতাকমর্ী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নানা ভাষায় সমালোচনা করেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সংস্কার করাতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। যার কারণে তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে ওইভাবে সংস্কার করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, যশোর-খুলনা মহাসড়ক সংস্কার কাজে দ্রুত হাত দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মাঝামাঝিতে একই সড়কে একই কায়দায় জোড়াতালি আর পট্টি দেওয়া হয়।

Popular

More like this
Related

কাল ৫ লাখের বেশি শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন এ ক্যাপসুল

কাল ৫ লাখের বেশি শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন এ...

প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে: রিজভী

প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে: রিজভী বিএনপির সিনিয়র...

নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবকে কী বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবকে কী বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা...

জাকাত আদায়ের মাসয়ালা 

জাকাত আদায়ের মাসয়ালা মাসয়ালা: নিজ প্রয়োজনীয় খরচাদি বাদ দিয়ে যে...