ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়া মানুষ

Date:

 প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের পর রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়া মানুষ। এর মধ্য দিয়ে রাজধানীর ব্যস্ততম পয়েন্ট বিশেষ করে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দিয়ে নগরে ফিরছেন হাজারো মানুষ।
তাদের মধ্যে কেউ একা, কেউ আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে ফিরছেন। অনেকের চোখে-মুখে দেখা গেছে দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তির ছাপ।
বুধবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে এ ফেরার চিত্র দেখা গেছে।
পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটি কাটিয়ে সিলেট থেকে ঢাকায় এলেন মারুফ শেখ। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি এখনও শেষ হয়নি। তারপরও ঢাকায় ফিরতে হলো ব্যক্তিগত কাজের জন্য। এ ছাড়া বাচ্চাদের স্কুল শুরু হবে আগামী সপ্তাহে। তাই আগেই চলে এলাম।
কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস থেকে নামলেন আশিকুর রহমান নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, আসার সময় টিকিট কাটতে অসুবিধা হয়নি। এবারের মতো স্বস্তির ঈদযাত্রা আগে কখনও পাইনি। যাত্রীদের চাপ থাকলেও নির্ধারিত সময় ছেড়েছে ট্রেন।
জামালপুর এক্সপ্রেস থেকে লাগেজ নিয়ে নামছিলেন তাইজুল ইসলাম নামে এক যাত্রী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের কয়েকদিন বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভালো সময় কাটিয়েছি। সবাইকে ছেড়ে ঢাকায় আসায় একটু খারাপ লাগছে।
কথা হয় কমলাপুর স্টেশনে কাজ করা কুলি রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, আজ থেকে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। সকালে অনেকটা চাপ ছিল, এখন একটু কম। বিকেলে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত ঈদে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ ট্রেনে যাত্রা করে। এই কারণেই বাড়তি নজর কমলাপুরে থাকে।  ঈদযাত্রায় সব ট্রেন সঠিক সময়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।  প্রতিদিন ৭১টি ট্রেন চলছে। এ কয়দিন কমলাপুর স্টেশনে টিকিট ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আজ থেকে শুরু হয়েছে ফিরতি যাত্রা।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, এবারের ঈদযাত্রায় স্টেশনের শুরু থেকে ট্রেনের গন্তব্য পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। টিকিট যাচাই করতে ভেরিফিকেশন করা হচ্ছে। পাশাপাশি ট্রেনের সময়সূচি ঠিক রাখতে এবং যাত্রীদের সুবিধার্থে ঢাকাগামী নয়টি ট্রেনের বিমানবন্দর স্টেশনের যাত্রাবিরতি বাতিল করা হয়েছে। ঢাকামুখী ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ঢাকামুখী এবং ঢাকা স্টেশন থেকে জয়দেবপুরমুখী ট্রেনে টিকিট ইস্যু বন্ধ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে ঈদযাত্রা নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও উৎসবমুখর করতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্মসহ সব জায়গায় র‌্যাব, পুলিশ, আনসার সদস্যের পাশাপাশি রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীও ছিল।
এ বিষয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের কর্মকর্তা (স্টেশন মাস্টার) আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল থেকে ঈদের ফিরতি যাত্রা শুরু হয়েছে। সকাল থেকে নির্ধারিত সময়ে ফিরছে ট্রেন। সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় ফিরেছে ৩৫টার মতো ট্রেন। ট্রেনগুলোতে যাত্রী ছিল স্বাভাবিক।
 আগামী বৃহস্পতিবার, শুক্র ও শনিবার ফিরতি যাত্রার চাপ পড়বে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস, এগারো সিন্ধুর প্রভাতী, তিস্তা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী, অগ্নিবীণাসহ বেশ কয়েকটি ট্রেন কমলাপুর থেকে নির্ধারিত সময়ে ছেড়েছে। শুধু একটি ট্রেন এক ঘণ্টা লেট করেছে। ট্রেনে এবারের ঈদযাত্রা খুবই স্বস্তিদায়ক হয়েছে।

Popular

More like this
Related

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনে চলমান নির্মম গণহত্যা ও আগ্রাসনের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে...

যশোরে পুকুর থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার 

যশোরের অভয়নগর উপজেলার একতারপুরে একটি পুকুর থেকে নবজাতক শিশুর...

নির্বাচনি আচরণবিধির খসড়া তৈরি, প্রচারণায় পোস্টার থাকছে না: ইসি

‘রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত না নিয়েই’ নির্বাচনি আচরণবিধির একটি খসড়া...

লাঠিপেটা না করে ছত্রভঙ্গ, রাষ্ট্রপতি পদক পাচ্ছেন সেই পুলিশ কনস্টেবল 

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পুলিশ সদস্যের দায়িত্ব পালন করার...