
ঢাকা: গণহত্যাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনো নির্বাচন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক।
বৃহস্পতিবার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর কর্মী সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।অনুষ্ঠানটি দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুফতী নূর মোহাম্মদ আজিজীর সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার রাজির পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক।
তিনি বলেন, জুলাই আগস্ট বিপ্লবসহ বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশে সংঘটিত প্রতিটি গণহত্যা, গুম, খুন ও জুলুমের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি নরকে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষকে জুলুম শোষণ করে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে গেছে, যেখান থেকে তাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার নেতৃত্বে এ দেশের জনগণ যেই লড়াই সংগ্রাম করেছে, এটা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যহীন ছাত্র জনতা তাদের যে দৃঢ়তা দেখিয়েছে, সেটা আগামী দিনেও অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস তরুণদের পাশে সর্বদা ছিল, আছে, থাকবে।
মামুনুল হক বলেন, জুলাই বিপ্লব শুধু শাসকের চেহারা বদল করার জন্য হয়নি, বরং শাসকদের গুণগতমান পরিবর্তন করে বৈষম্যহীন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য হয়েছে। কাজেই বিপ্লবের এই উদ্দেশ্যকে কেউ ব্যর্থ করতে চাইলে আমরা রুখে দাঁড়াবো।
তিনি আরো বলেন, ভারত সব সময় আমাদের দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে আধিপত্যবাদ বিস্তার করে আমাদেরকে শাসন করতে চেয়েছে। বিগত ১৬ বছর তারা লুটপাট করে এ এদেশের মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছে। তাই এখন সময় এসেছে ভারতের চোখে চোখ রেখে সকল আধিপত্যের শিকড়কে উপড়ে ফেলার। এ জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে যে ঐক্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, সেই পদক্ষেপকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। কাজেই ভারতের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতি আরো শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি সংগঠনের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বিগত ৩৫ বছর যাবত দেশ ও জনগণের কল্যাণে প্রতিটি ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯২ তে বাবরি মসজিদ শহিদ হওয়ার প্রতিবাদে যে ঐতিহাসিক লংমার্চ হয়েছে, তার জন্য ইতিহাস খেলাফত মজলিসকে মনে রাখবে। সারা বিশ্বে যেখানেই মুসলিমরা জেগে উঠবে সেখানেই আমরা সংহতি জানাবো। আজকে আমরা সিরিয়ার উত্থানকে স্বাগত জানাই। এর মাধ্যমে তাগুতি শক্তিকে বলে দিতে চাই, তোমাদের সময় শেষ হয়ে এসেছে।
সর্বশেষ তিনি আগামী দিনের নতুন বিপ্লবের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামীর রাজনীতি হবে বিভাজনহীন রাজনীতি, আগামীর বিপ্লব হবে ইসলামের বিপ্লব। এই বিপ্লবের জন্য জনগণকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
কর্মী সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাও: তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা আবু সাইদ নোমান, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, মাওলানা ওযায়ের আমীন, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেদ্রীয় সভাপতি ছাত্র নেতা মুহাম্মদ কামাল উদ্দীন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাওলানা হাবীবুর রহমান, সহ সভাপতি মাওলানা হাসান জুনাইদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি মাওলানা আতিকুল্লাহ, মাওলানা শরীফুজ্জামান জসীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মুফতি সানাউল্লাহ আমিনীসহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানার সভাপতি, সেক্রেটারি ও অন্যান্য দায়িত্বশীলবৃন্দ।