আগের দুই বিপিএলে দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। এই মৌসুমেও তেমন কিছুই প্রত্যাশা ছিল হৃদয়ের ব্যাট থেকে। তবে কোনোভাবেই হচ্ছিল না তা। উল্টো, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে হৃদয়ের ব্যাটিং চিন্তার খোরাক হচ্ছিল সমর্থকদের কাছে। এই অবস্থায় হৃদয় তার সেরা ইনিংসটা খেললেন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে।
বিপিএলে চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে ৫৬ বলে অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংস খেলে ফরচুন বরিশালকে ফাইনালে তুলেছেন হৃদয়। অথচ, এই ম্যাচ আগে ১২ ম্যাচে তার রান ছিল মাত্র ১৯৮। ছিল না কোনো ফিফটি। সেই তিনিই এদিন বরিশালের জয়ের নায়ক। এমন দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে হৃদয় জানিয়েছেন, ব্যাটিংয়ে ঠিক কোথায় সমস্যা হচ্ছিল তার। আর কীভাবেই বা তিনি রানে ফিরেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টে হৃদয় পারফর্ম করতে না পারার পেছনে ব্লক খাওয়ার কথা জানিয়েছেন। আর সেই ব্লক সরানোর পেছনে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। সেই সঙ্গে অভিভাবক তামিমের প্রশংসা করেছেন।
হৃদয় লিখেছেন ‘সেদিন “রাইটার্স ব্লক” নামে একটি টার্মের সঙ্গে পরিচিত হলাম। বিস্তারিত পড়াশোনা করে আমার মনে হচ্ছিল, আমিও যেন কোথাও একটা ব্লক খেয়ে আছি। পরিশ্রম করছি নিয়মিত, ধৈর্য ধরেছি, চেষ্টার কমতি নেই; কিন্তু রান হচ্ছিল না। বিশেষ করে গত দুই বিপিএলের পর আমার কাছে সবার প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী।’
সবশেষ দুই আসরে হৃদয়ের রান যথাক্রমে-কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে ১৪ ম্যাচে ৪৬২ ও সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ১২ ম্যাচে ৪০৩। দুবারই তার দল ওঠে ফাইনালে। অথচ এবার সেই অর্থে পারফর্ম করতে পারছিলেন না হৃদয়। এই অবস্থায় তার ওপর আস্থা রাখার জন্য তামিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হৃদয়।
অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও অন্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে হৃদয় লেখেন, ‘রান না পাওয়ার আক্ষেপ আমার থেকেও আমি আমার ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে বেশি দেখেছি। তবে তার থেকে বেশি অনুপ্রেরণা দেখেছি আমার আশপাশের মানুষগুলোর চোখে। তামিম ইকবাল ভাই কাউকে বোঝাতে পারব না আপনি অভিভাবক হিসেবে কতটুকু যথার্থ। এত প্রত্যাশা থাকার পরেও, পুরো টিমের সবাই প্রতিনিয়ত আমাকে বুঝিয়েছেন সবই স্বাভাবিক, হৃদয় রানে ফিরবেই! কৃতজ্ঞতা আমার কোচিং স্টাফ, সকল খেলোয়াড়দের প্রতি। ফিজিও বায়েজিদ ভাই, শাহীন ভাই আপনারা দুজন বিশেষকিছু আমার জন্য।’
সমর্থকদের নিয়ে হৃদয় লিখেছেন, ‘ক্রিকেটকে যারা ভালোবাসে, তারা আমাদেরও ভালোবাসে জানি। ভালো খেললে তালি দেয়, আমরা খারাপ করলে তাদের ভেতরেও হতাশা কাজ করে। সত্যি বলতে ভক্তদের এই পজিটিভ-নেগেটিভ ফিডব্যাক দুটোই হোক আমাদের শক্তি। ধন্যবাদ মহান রাব্বুল আলামিনকে, ধন্যবাদ ফরচুন বরিশালের সকল সদস্যকে, ধন্যবাদ আমাদের সকল সমর্থককে।’