কে এই কানাডার ‘লেডি ট্রাম্প’?

Date:

দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে তার কঠোর অবস্থান তুলে ধরেন। আর ক্ষমতা গ্রহণের দিনই জারি করেন- অবৈধ কোনো অভিবাসী মার্কিন মুলুকে থাকতে পারবে না। ইতোমধ্যে তার প্রয়োগও হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।

এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশি দেশ কানাডার এক নারী রাজনীতিবীদ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরেই কথা বলছেন। বিভিন্ন বিবৃতিতে জানাচ্ছেন, তিনি সরকার গঠন করতে পারলে কানাডা থেকে সব অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করবেন। যার কারণে তাকে ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা করে ‘লেডি ট্রাম্প’ ডাকা হচ্ছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার এই রাজনীতিবীদের নাম রুবি ধল্লা। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার সাবেক সংসদ সদস্য। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কানাডার লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অংশগ্রহণ করেছেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রুবি অভিবাসন ইস্যুতে তার কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরলে নতুন করে আলোচনায় আসেন। পাশাপাশি মানব পাচার কঠোরভাবে দমনেরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেব এবং মানব পাচার কঠোরভাবে বন্ধ করব। এটাই আমার প্রতিশ্রুতি।

তার এই কঠোর অবস্থানের কারণে অনেকেই তাকে ‘লেডি ট্রাম্প’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন।

রুবি ধল্লা ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ব্র্যাম্পটন-স্প্রিংডেল আসনের এমপি ছিলেন। বর্তমানে লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের জন্য শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন পোস্ট ও অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি হওয়ার তীব্র ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

রুবি ইতিহাস সৃষ্টি করে লিবারেল পার্টির প্রথম নারী নেতা এবং কানাডার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন বলে এক ভিডিওতে দাবি করেন।

ভিডিওতে এই রাজনীতিবীদ বলেন, আমরা ইতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছি, লিবারেল পার্টির প্রথম নারী নেতা এবং কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে।

দেশটির নেতৃত্বে আসার জন্য তিনি কানাডার নতুন প্রজন্মের ভোটারদের আকৃষ্ট করার ওপর জোর দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, প্রথম ধাপ শেষ, আমরা এখন দ্বিতীয় ধাপে যাচ্ছি এবং দেশের সব লিবারেল সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছি।

তিনি একটি পুনর্জাগ্রত লিবারেল পার্টির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, আমি কানাডার জনগণের সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান দিতে চাই।

রুবি ধল্লার রাজনৈতিক যাত্রা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি কানাডার প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী এমপি এবং প্রথম শিখ নারীদের একজন। এছাড়া তিনি হাউস অব কমন্সেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

নেতৃত্ব সম্পর্কে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আমি কোনো ক্ষমতার জন্য লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব দৌড়ে অংশ নিচ্ছি না। আমি এখানে এসেছি কারণ, আমি আমাদের পার্টি ও দেশের ভবিষ্যতের ওপর বিশ্বাস করি। আমাদের পার্টিকে পুনরায় কেন্দ্রীয় অবস্থানে আনতে হবে, যাতে সাধারণ কানাডীয়রা সফল হতে পারে।

বর্তমান ট্রুডো প্রশাসনের বাইরে থেকে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন ধল্লা। তিনি বলেন, কানাডীয়রা ট্রুডো ২.০ চায় না। কনজারভেটিভদের হারাতে হলে আমাদের সত্যিকারের পরিবর্তন দরকার।

রুবির প্রচারের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হলো অবৈধ অভিবাসন ইস্যু। তবে তার সঙ্গে ব্যাংক অব কানাডার সাবেক গভর্নর মার্ক কার্নি এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।

লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের এই প্রতিযোগিতা ২০২৫ সালের ৯ মার্চ শেষ হবে। ফেডারেল নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করা হবে।

Popular

More like this
Related

যশোরে মধ্যরাতে নাইটগার্ডকে বেঁধে ডাকাতির ঘটনায় মামলা

যশোরে একটি ইজিবাইকের শোরুমে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা...

যশোরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সারাদেশ বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২...

যশোরে শীতার্তদের মাঝে জামায়াতে ইসলামীর কম্বল বিতরণ কর্মসূচি

রোববার বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ১১নং রামনগর ইউনিয়ন, যশোর...

যশোরে অপারেশনকালে ধরা খেয়ে শ্রীঘরে স্যাকমো ফিরোজ কবির

ফিরোজ কবির। এমবিবিএস পাস না করেও তিনি বিরাট সার্জন।...